শ্রেষ্ঠ দিনের আমল

 

q         দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন জুমার দিন

জুমার দিন শ্রেষ্ঠ দিন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো জুমার দিন এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪)।

q         যে কারণে জুমার দিন শ্রেষ্ঠ
ইসলামি ইতিহাসে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হজরত আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিন শ্রেষ্ঠ হওয়ার পাঁচটি কারণ উল্লেখ করেছেনঃ

(১) আল্লাহ তাআলা এই দিনে প্রথম মানব হজরত আদম আ.-কে সৃষ্টি করেছেন।

(২) জুমার দিনে আদম আ.-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন

(৩) জুমাবারে হজরত আদম আ.-কে মৃত্যু দিয়েছেন। ৪. এ দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা কুবল করবেন। যতক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না।

(৫)সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এ দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস ৮৯৫)


q         জুমার দিনের শ্রেষ্ঠ আমল

গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে বেশ কিছু চমৎকার আমলের কথা কুরআন-হাদিসে পাওয়া যায়, যথা:

১) আগেভাগে মাসজিদে গমন করা

মহান আল্লাহ বলেন- হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।’ (সুরা জুমুআ, আয়াত : ০৯)।

২) হাদিসে  নিম্নবর্ণিত বিশেষ নির্দেশনা মেনে চলাঃ

১. মসজিদে যাওয়ার আগে গোসল করা, (বুখারী: ৮৭৭)।

২. মিসওয়াক করা, (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)।

৩. উত্তম পোশাক পরিধান করা, (ইবনে মাজাহ: ১০৯৭)।

৪. গায়ে তেল (লোশন) ব্যবহার করা, (বুখারী: ৮৮৩)।

৫. সুগন্ধি ব্যবহার করা, (বুখারী: ৮৮০)।

৬. পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা, (মুসলিম : ১৪০০)।

৭. মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধুমপান না করা, (বুখারী: ৮৫৩)।

৮. মসজিদে প্রবেশের পর অন্য মুসল্লিদের ফাঁক করে বা গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যাওয়া, (বুখারী : ৯১০)।

৯. কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা, (বুখারী : ১১)।

১০. সালাতের জন্য কোনো একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই সালাত আদায় করা, (আবু দাউদ : ৮৬২)।

১১. নির্ধারিত নামাজ আদায় করা। এমনকি ফরজ সালাতের আগে ও পরে দুই/চার রাকাত করে নফল সালাত আদায় করা, (বুখারী: ৯৩০, আবু দাউদ: ১১৩০)।

১২. ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা পরিবর্তন করে বসা, (আবু দাউদ: ১১১৯)।

১৩. ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা, (আবু দাউদ: ১১১০, ইবনে মাজাহ: ১১৩৪)।

১৪. খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা, (আবু দাউদ: ১১০৮)।

১৫. এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া বা তেলাওয়াত না করা, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে, (আবু দাউদ : ১৩৩২)।

-উক্ত কাজগুলির যথাযথ পালনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির জন্য এই জুমা ও তার পূর্ববর্তী জুমার মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)।

৩) দরুদ পড়াঃ

জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করার ব্যাপারে রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা রয়েছে। তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ: ১০৪৭)। এছাড়া, মহান রব স্বয়ং রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠের তাগিদ দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেছেন : আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরূদ পাঠান। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠাও। (সূরা আহযাব : আয়াত ৫৬)।

৪) সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করাঃ

রাসুল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা আল কাহাফ পড়বে, তার (ঈমানের) নূর এ জুমাহ্ হতে আগামী জুমাহ্ পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী : ৫৯৯৬)।

Post a Comment

0 Comments